এক্সক্লুসিভ



ডেস্ক রিপোর্ট

ফেব্রুয়ারী / ০৮ / ২০২২


dhakacity

মৌলভীবাজারে শিশু হাতিকে প্রশিক্ষণের নামে নির্যাতন, আদালতের কারণ দর্শানোর নির্দেশ


65

Shares

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের কুচাইটল এলাকায় ‘শিশু হাতি’ (হাদানি) প্রশিক্ষণ দেয়ার বিষয়টি মৌলভীবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মুহম্মদ আলী আহসান শিশু হাতির ওপর শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও ইউটিউবে ও গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদের বর্ণনা দেখে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।

এরই প্রেক্ষিতে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এবং প্রাণীকল্যাণ আইন-২০১৯ অনুযায়ী হাতির প্রতি নিষ্ঠুর নির্যাতন নিরসনে আদালত সোমবার দুপুরে জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নিষ্ক্রিয়তা বেআইনি গণ্যে কেন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না- সে মর্মে আগামী ১৫ই মার্চের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। উল্লিখিত তারিখের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন ও কারণ দর্শানোর জবাব দাখিলের জন্য ধার্য্য করা হয়।

‘শিশু হাতি’ প্রশিক্ষণ (হাদানি) নামক প্রাচীন পদ্ধতিতে বন্য হাতিকে পোষ মানানো হয়। প্রশিক্ষণ অবস্থায় দড়ি দিয়ে বেঁধে গাছের খুঁটির সঙ্গে আবদ্ধ করা হয়। এ সময় শিশু হাতির মা’কে দূরে রাখা হয়। নির্দয়ভাবে শিশু হাতিকে শারীরিক নির্যাতন করা হয় এবং যথেষ্ট খাদ্য প্রদান করা হয় না।

বর্ণিতভাবে ২ মাস প্রশিক্ষণ দেয়ার পর সার্কাসে বিভিন্ন কসরৎ এবং গাছ পালা পরিবহনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। জুড়ী গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে পাহাড়ের গহীণে চার বছরের হাতি শাবককে বশে লোহা দিয়ে তৈরি কুকু ব্যবহার করে চালানো হয় নির্যাতন।

মা হাতিটির নাম নূরজাহান, তার দু’টি বাচ্চা। চার ও পাঁচ বছর বয়সী এই হাতি দু’টিকে ব্যবসার কাজে নামাতে চান মালিক। দুই থেকে তিন মাসব্যাপী চলা এ প্রশিক্ষণের সময় নানা কলাকৌশল শেখাতে মূল অস্ত্রই হলো নির্মম শারীরিক নির্যাতন।

এই সময় হাতিটি শৃঙ্খলমুক্ত হতে জোরাজুরি করে, যন্ত্রণায় শুঁড় উপরে তুলে কাতরায়। ফাঁকে ফাঁকে, খড়ের সঙ্গে মিষ্টান্ন মিশিয়ে হাতিটিকে খাওয়ানো হয়। এরপর কাঠের গুঁড়ি থেকে ছাড়িয়ে দড়ি দিয়ে টেনে টেনে নানা জায়গায় ঘোরানো হয়। তারপর আবার বেঁধে রাখা হয় শাবকটিকে।

এই সময় মাটিতেও লুটিয়ে পড়ে হাতি শাবক। কিন্তু প্রশিক্ষণ নামে এই নির্যাতন থামে না। সাতজন প্রশিক্ষকের হাতে থাকা সাতটি লোহার কুকু, যা দিয়ে চলে অবিরাম খোঁচা”। হাতি শাবক বশে আনার এমন নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশিত ওই খবরে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আদালতে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

এক্সক্লুসিভ