সিলেট প্রতিক্ষণ



আ:র

অক্টোবর / ০৪ / ২০২৩


ভয়ঙ্কর না হলেও ডাউকি ফল্ট নিয়ে দুশ্চিন্তা।


18

Shares

সিলেট অঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিকম্পের কারণে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিলেটের পাশেই ডাউকি ফল্ট। সেটি ভারতের মেঘালয় ও আশপাশ এলাকায় অবস্থিত। এর পাশে আসাম ফল্ট নামে আরও একটি ভূমিকম্প জোন রয়েছে।

তবে; সেটি তেমন ভয়ঙ্কর না হলেও ডাউকি ফল্ট নিয়ে সব দুশ্চিন্তা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন- ঘন ঘন ভূমিকম্প দুটি বার্তা দেয়। এরমধ্যে একটি হচ্ছে ঝুঁকি কমায় ও অপরটি ঝুঁকি বাড়ায়। কোনটি হচ্ছে বলা মুশকিল।

এ কারণে প্রস্তুতির বিষয়টি মাথায় রাখার পরামর্শ তাদের। সিলেটের ঘন ঘন ভূমিকম্প নিয়ে গতকাল দুপুরে বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেছেন জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান। এতে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ সিদ্দিকী অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিট ১৮ সেকেন্ডে এ ভূ-কম্পন হয়। গতকাল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িষ্যা ও নেপালে ভূমিকম্প হয়েছে। গত সোমবার সিলেটসহ সারা দেশে যে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে সেটির উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের কাছে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে।

সিলেটের সীমান্ত এলাকা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে। মাটির অনেক গভীরে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। কম্পনটি ছিল ৫ দশমিক ২ মাত্রার। ভূমিকম্পের সময় সিলেট মহানগরের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বিভিন্ন বহুতল ভবন থেকে বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসেন।

এর আগে সিলেটে এক মাসের ব্যবধানে তিনবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ১৪ই আগস্ট থেকে ৯ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ কম্পনগুলো অনুভূত হয়েছিল। ৯ই সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টা ১৮ মিনিটে সিলেটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪।

এর উৎপত্তিস্থলও ছিল সিলেটের পার্শ্ববর্তী ভারতে, সে দেশের আসামে। এর আগে ২৯শে আগস্ট দুপুর ১টা ১৩ মিনিটে সিলেটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৫। এটি মৃদু ভূমিকম্প হওয়ায় অনেকেই ঘটনাটি টের পাননি।

তার আগে ১৪ই আগস্ট রাতে সিলেটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সেটিরও উৎপত্তিস্থল সিলেটের কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ সীমান্ত এলাকা বলে জানিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। ওই ভূমিকম্পের রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫।

ওইদিন আতঙ্কিত হয়ে অনেকেই ভবন ও বিপণিবিতান থেকে নেমে গিয়েছিলেন। ঘন ঘন ভূমিকম্পে জনগণকে সচেতন হতে হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সজীব আহমদ। তিনি গতকাল বিকালে জানিয়েছেন- ভূমিকম্পের পূর্ভাবাস মিলে না। সুতরাং আগাম সতর্ক বার্তা জানান দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কখন ভূমিকম্প হবে সেটি বলা মুশকিল। যেকোনো সময় হতে পারে।

এজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন- ডাউকি ফল্টের পাশেই সিলেট। এজন্য ভূমিকম্পের ডেঞ্জার জোনে অবস্থিত সিলেট অঞ্চল। আমাদের আবহাওয়া বার্তা সব সময় সেটি রেড জোনে রাখা হয়েছে।

এদিকে- গতকাল সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভূমিকম্প প্রস্তুতি ও করণীয় শীর্ষ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম।

তিনি জানিয়েছেন- ঘন ঘন ভূমিকম্প ঝুঁকি বাড়াতে পারে আবার কমাতেও পারে। ডাউকি ফল্ট ডেঞ্জার জোন। এখানে ভূগর্ভে দুটি প্লেট রয়েছে। এ কারণে এটি আরও বেশি বিপজ্জনক। বলা হচ্ছে; ফল্টের পূর্ব অংশে সাড়ে ৩০০ বছর পরপর বড় ভূমিকম্প হয়। এ কারণে আমাদের সচেতন হতে হবে।

বিশেষ করে বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণের দিকে মনোযোগী হতে হবে। তিনি জানিয়েছেন- চিলি ও হাইতিতে একই সঙ্গে একই মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। সেখানে দেখা বিল্ডিং কোড মানায় চিলিতে ক্ষয়ক্ষতি ছিল হাইতির চেয়ে অনেক কম।

যারা বিল্ডিং কোড মেনে চলবেন সেখানে ক্ষয়ক্ষতি কম হবে। এ ছাড়া- ভূমিকম্প হলে প্রচুর খালি জায়গা প্রয়োজন হয়। এজন্য সিলেটের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠ, এমসি কলেজ মাঠ এভাবে আরও যত মাঠ সব মাঠগুলোকে সংরক্ষণে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন; গত ৬-৭ বছরে সিলেট নগরে যেসব ভবন নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো বিল্ডিং কোড মেনে করা হয়েছে। পূর্বে নির্মাণ করা অনেক ভবন ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। সেগুলোর মালিককে বার বার নোটিশ দেয়া হয়েছে।

কিন্তু সেগুলো অপসারণ করা হচ্ছে না। অতিমাত্রায় ভূমিকম্প হলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হ

সিলেট প্রতিক্ষণ