সিলেট প্রতিক্ষণ



নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বর / ২৩ / ২০২৪


‘শেখ হাসিনাকে এনে বিচারের মুখোমুখি করা সরকারের দায়িত্ব : জোনায়েদ সাকি


70

Shares


শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করা সরকারের দায়িত্ব মন্তব্য করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘জুলাই আগস্টে যে ভয়ংকর হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে, এর আগে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে গুম, খুন, লুঠপাটের নেতৃত্বে ছিলেন শেখ হাসিনা। তাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা সরকারের কাজ ও দায়িত্ব। আশা করি তারা সফল হবেন।’

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সম্মেলন কক্ষে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার সংলাপ অনুষ্ঠান শেষে সাংবদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘জুলাই-আগষ্টে যে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড হয়েছে, ১ হাজার ৬০০ জনের উপর মানুষ নিহত হয়েছেন, ৫০০ জনের বেশি পুরোপুরি অন্ধ হয়ে গেছেন, ৫০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন-বুঝতেই পারছেন কী ভয়ংকর হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এর আগে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে গুম, খুন, ভয়ংকর লুটপাঠ-এ সব কিছুর নেতৃত্বে ছিলেন শেখ হাসিনা। তার নির্দেশেই সবকিছু হয়েছে। এ বিষয়গুলোতে তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং বাংলাদেশের মানুষ ন্যায় বিচার চায়।’ শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এসব দিক বিবেচনায় তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা-সেটা তো সরকারের একটা কাজ, দায়িত্ব। সে কাজ তারা করছেন, আশা করি তারা সফল হবেন।’

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মুক্তিযোদ্ধার উপর হামলার ঘটনাকে নিন্দনীয় ও ন্যাক্কারজনক মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ ধরণের কাজ নিন্দনীয়, ন্যাক্কারজনক। যারা এ কাজ করেছে অবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় আনা দরকার।’ সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘তবে এটা ঠিক, বাংলাদেশের মানুষের আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত আছে এমন মানুষের প্রতি ক্ষোভ আছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত যারা অপরাধ করেছে, যারা নানাভাবে আমাদের সন্তানদের হত্যা করতে, লুঠপাটে, দুর্নীতিতে, ফ্যাসিবাদ কায়েমে যুক্ত থেকেছে, সহযোগিতা করেছে তাদের ব্যাপারে জনগণের ক্ষোভ আছে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই আইন হাতে তুলে না নিয়ে আইনগতভাবেই এই সমস্ত অপরাধীদের মোকাবিলা করা উচিত। এসব ক্ষেত্রে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি সরকারের কাছে আহ্বান জানাই।’

সংস্কার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়েই ঠিক হবে নির্বাচন, সংস্কার এবং কী কাজগুলো নির্বাচনের আগে হবে। কী কী সংস্কার নির্বাচনের পরে হবে এবং সময়সীমা কি হবে? এ নিয়ে সকলের ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতেই সুনিদিষ্ট রূপরেখা দরকার।’ ইতিমধ্যে অন্তবর্তীকালীন সরকার ধারণা দিয়েছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যে কমিশনগুলো গঠিত হয়েছে জানুয়ারি মাসে সেগুলো যদি রিপোর্ট দেয়, সে অনুযায়ী একটা আলোচনার জায়গা তারা তৈরি করবেন।’

চার মাসে মাসে অন্তবর্তীকালীন সরকারের সফলতা-ব্যর্থতা দুটোই আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘চার মাস পার হয়ে গেল। এ সময়ের মধ্যে তাদের অনেকগুলো সাফল্য আছে। কিন্তু একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্য-এসব বিষয়ে এখনো মানুষের ক্ষোভ আছে। নিয়ন্ত্রণের জায়গাগুলোতে এখনো নানা দুর্বলতা দেখা গেছে।’

সরকারে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিষয়ে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যেটা মনে করি, সরকার রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ করে। এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানে পতিত ফ্যাসিস্টের দোসররা যেভাবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করে রাখার চেষ্টা করছে। সেই সব জায়গায় সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে। এবং জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দ্রুত তাদের সমস্যাগুলো সমাধানের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার জন্য এই পুরো রাষ্ট্রশক্তিকে যতটা পুনর্গঠন করা যায় তত দ্রুততার সঙ্গে তারা সেটা করবেন। সেক্ষেত্রে সরকারের একটি প্রস্তাবনা থাকতেই পারে।’


ওয়াইএফ/০১

সিলেট প্রতিক্ষণ