23
Sharesদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের কথা আগেই জানিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। শ্বেতপত্র তৈরির জন্য একটি কমিটি গঠনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বুধবার (২৯ আগস্ট) সেই কমিটির সদস্যদের নাম প্রকাশ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। যার প্রধান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নাম।
‘বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি’তে থাকছেন আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট ১১ ব্যক্তি। যারা অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের কৌশলগত পদক্ষেপ, জাতিসংঘের টেকসই অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি বাস্তবায়ন ও স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে করণীয় নির্ধারণের জন্য শ্বেতপত্র তৈরি করবেন।
কমিটিকে ৯০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
এই কমিটিতে রয়েছেন বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সাবেক অধ্যাপক ও বেসরকারি সংস্থা রামরুর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তাসনীম এ সিদ্দিকী।
অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই কমিটিতে রয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম. তামিম ও জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শারমিন্দ নীলোর্মি।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমিটিতে রয়েছেন ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিক্স ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক এ কে এনামুল হক এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অফ গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভোলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা থেকে এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. কাজী ইকবাল, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভোলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফেরদৌস আরা বেগম ও সিপিডির ডিস্টিংগুইশ ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
এদের মধ্যে ম. তামিম ২০০৮ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া সেসময় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তীব্র ছাত্র-গণ আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। এরপর ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নানা ধরনের পরিবর্তন আনতে শুরু করে সরকার। বের হয়ে আসতে থাকে আগের শাসনামলের বিভিন্ন দুর্নীতি-অনিয়মের তথ্য।
এরই মধ্যে ২১ আগস্ট দেশের বিদ্যমান অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরতে শ্বেতপত্র প্রণয়েনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে মোটাদাগে ছয়টি বিষয়ে আলোকপাত করার প্রস্তাব রেখেছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। সেগুলো হলো-সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা, মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা, বাহ্যিক ভারসাম্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বেসরকারি বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা অবৈতনিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিকল্পনা কমিশন কমপ্লেক্সের কোনও একটি ভবনে হবে কমিটির দপ্তর। কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ।
এছাড়া সরকারের সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তর কমিটিকে চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করবে।
ওয়াইএএফ/০২