সিলেট প্রতিক্ষণ



দেশদর্পণ ডেস্ক

ডিসেম্বর / ১২ / ২০২৪


জামিনে মুক্ত সিলেটের ৫ আওয়ামী লীগ নেতা


214

Shares


অবৈধভাবে অনুপ্রবেশসহ বিভিন্ন অভিযোগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় গ্রেপ্তার হওয়া  সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানসহ ৫ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন মেঘালয় রাজ্যের একটি আদালত।  

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম জৈন্তিয়া হিলস জেলার এমলারিয়াং বিচারিক আদালত  তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। পরে মেঘালয়ের জোয়াই কারাগার থেকে তারা মুক্তি লাভ করেন। 

মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান,  সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সিলেট মহানগর যুবলীগের সহ সভাপতি আব্দুল লতিফ রিপন,  সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য ইলিয়াছ আহমদ জুয়েল ও সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ছাতক উপজেলা যুবলীগ নেতা সাহাব উদ্দিন সাহেল। 

মামলার বিবরণ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ‘ডাউকি পিএস কেস নং ১৯(১০)২৪ ইউ/এস ১১৮(১)/ ৩০৯(৪)/ ৩১০(২)/ ৩২৪(৪) বিএনএস এণ্ড ১৪ ফরেইন অ্যাক্ ‘ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। 

এজাহারে কারো নাম উল্লেখ না থাকলেও পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে এই ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। আরো ৪ জন আসামী পলাতক রয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। 

আওয়ামী লীগের এই ৫ নেতাকে গ্রেপ্তারের পর দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগে মামলা হয়েছিল বলে খবর প্রচার করে। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। 

এ বিষয়ে সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তির স্ত্রী মাওয়া সিদ্দিকা-দেশদর্পনকে বলেন, ' একটি মহল ষড়যন্ত্র করে  তাদের গ্রেপ্তার করিয়ে অপপ্রচার করেছে। এতে  সামাজিকভাবে আমরা অপদস্ত হয়েছি। আত্মীয় স্বজনের কাছে লজ্জা পেতে হয়েছে। কয়েকটি গণমাধ্যম সঠিক সংবাদ প্রকাশ করায় আমরা স্বস্তি পেয়েছি। এখন কারাগার থেকে আমার স্বামীসহ সকল মুক্তি পেয়েছেন শুনে পরিবারের সকল আনন্দিত ।'  

কলকাতায় অবস্থানরত সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন, 'বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে অল্প ক’টি স্থল সীমান্ত পারাপারের মধ্যে ডাউকি-তামাবিল একটি। এটি মূলত বাংলাদেশে কয়লা ও পাথর পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়। ডাউকি এলাকায় পাথর ব্যবসা নিয়ে তাদের কারো কারো সঙ্গে স্থানীয়দের বিরোধ রয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। এছাড়া বাসা ভাড়া সংক্রান্ত একটি বিষয়ের কারণও তাদের গ্রেপ্তারের নেপথ্যে থাকতে পারে।'

ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট  আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন সময় তারা সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং যান। শিলং শহরে তারা প্রথমে পুলিশ বাজার এলাকার একটি হোটেলে অবস্থান নেন। পরে তারা শহরের একটি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে  থাকেন। গত ৫ নভেম্বর তারা শিলং থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত হন। তাদের সকলের বিরুদ্ধে সিলেটের বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল তাদের কারামুক্তির বিষয়টি দেশদর্পন-কে নিশ্চিত করে বলেন,  মুক্তি লাভের পর তাদের  সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আদালত তাদের প্রতি সুবিচার করেছেন।

জোয়াই অবস্থানরত সিলেটের একজন ব্যবসায়ী জানান, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিধাননগর পৌরসংস্থার বাগুইআটি এলাকার একটি বাসা থেকে রবিবার সকালে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে মেঘালয় পুলিশ। পরে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত আদালতে হাজির করে সোমবার রাতে তাদেরকে মেঘালয় রাজ্যের জোয়াই থানায় নিয়ে আসা হয়। তারা প্রায় ৩ মাস আগে  ভারতে প্রবেশ করে মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের লাইমক্রা পুলিশ স্টেশনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেন। অজ্ঞতাবশত সংশ্লিষ্ট থানাকে না জানিয়ে মাস খানেক আগে তারা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় চলে যান। পরে  কলকাতা মেট্রোপলিটন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেএমডিএ) আওতাধীন বাগুইআটি এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া করে বসবাস করতে থাকেন।


ওয়াইএফ/০১

সিলেট প্রতিক্ষণ