সিলেট প্রতিক্ষণ



নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ / ০৪ / ২০২৫


এক হালি হরিপুরী জারা লেবু ৪৫০০ টাকা


26

Shares


রমজান মাসে সিলেটে লেবুর বাজারে চলছে তুঘলকি কাণ্ড। বড় সাইজের লেবুর হালি ২৫০ টাকা আর সবচেয়ে ছোট সাইজের লেবু কিনতে গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। তবে সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে জারা লেবুর দাম। নগরের বন্দরবাজারের লালবাজারে এক হালি জারা লেবুর দাম সাড়ে ৪ হাজার টাকা হাঁকা হয়েছে। 

সিলেট নগরের বন্দরবাজার, আম্বরখানা, রিকাবী বাজার, মেডিক্যাল রোড বাজার, মদিনা মার্কেট বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বছরের এই সময়টায় লেবুর ফলন কিছুটা কম হওয়ায় বাজারে দাম চড়া বলে দাবি বিক্রেতাদের। তবে ক্রেতারা বলছেন, লেবু এখন সারা বছরই চাষ হয়। তাছাড়া রমজানের দুই দিন আগেও যে লেবুর হালি ছিল ২০ টাকা সেটি এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

নগরের বন্দরবাজারের ব্রাহ্মময়ী বাজার ও লাল বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণ বড় আকারের লেবু প্রতি হালি ১২০ টাকা, ছোট আকার ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ লেবুর মধ্যে একটু বড় আকারের লেবুর হালি ২৬০ টাকা দাবি করলেন এক বিক্রেতা। হাসান আহমদ নামের ওই বিক্রেতা বললেন, ‘এটি এলাচি জারা আবার কেউ ঠনা লেবুও বলে। এর শক্ত অংশ অনেকে শখ করে খান। এগুলো প্রতি হালি ২৫০ টাকায় বিক্রি করছি।

নগরের লাল বাজারের ছোট্ট দোকানে নানা জাতের লেবু নিয়ে বসেছেন ইমন আহমদ নয়ন। তিনি কালের কন্ঠকে বলেন, ‘বড় সাইজের হরিপুরী জারা লেবু ৪ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করছি। মাঝারি সাইজেরগুলোর হালি ১ হাজার ৬০০ টাকা।’ দাম এত বেশি কেন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হরিপুরি জারা লেবুর চাহিদা বেশি, দামও বেশি। খেতেও সুস্বাদু।’ তিনি মাঝারি সাইজের অন্য আরেকটি জারা লেবু দেখিয়ে বললেন, ‘এগুলো আবার ৪০০ টাকা হালি।’ দামের তারতম্যের কারণ হিসেবে তিনি বললেন, ‘এগুলো নরসিংদীর জারা লেবু, দাম কিছুটা কম, ৪০০ টাকা। একই সাইজের হরিপুরী জারা লেবু আবার ষোল’শ টাকা।’ তার এখানে আদা লেবু ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন বলে জানালেন।

বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলার সময়ই হারুনুর রশীদ নামে এক ক্রেতা এসে হরিপুরী জারা লেবুর দাম জানতে চাইলেন। বিক্রেতা বললেন, ‘পয়তাল্লিশ’শ টাকা।’ ক্রেতার যেন বিশ^াস হয় না। ফের বললেন, ‘কত বললেন?’ বিক্রেতা আবারো বললেন, ‘পয়তাল্লিশ’শ টাকা’। ক্রেতা চোখেমুখে বিস্ময় নিয়ে খেদোক্তি করে বললেন, ‘বাপরে, আমার বাকি জীবনেও এ লেবু না খেলে চলবে।’ তিনি আর দাম দর না করেই চলে গেলেন। 

আরেকজন প্রবাসী এসে দাম জিজ্ঞাস করলেন। দাম শুনে কৌতুহল নিয়ে কিছু প্রশ্ন করলেন। তিনি তিন হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত দামদর করলেও বিক্রেতা রাজি হলেন না। ৪ হাজারের নিচে বিক্রি করবেন না।

শওকত হোসেন নামে এক ক্রেতা বললেন, ‘হরিপুরী জারা লেবু আমাদের জন্য নয়, বিত্তশালীদের জন্য। তবে সাধারণ লেবুর দাম রমজানকে সামনে রেখে যেভাবে বাড়ানো হয়েছে তা এক কথায় অবিশ^াস্য। যে লেবুর হালি রমজানের দুই দিন আগেও ২০ টাকা ছিল সেটি এখন ৮০ টাকা চাইছে। এবার রমজানে তেল ছাড়া প্রায় সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলেও লেবু সিন্ডিকেটে চলে গেছে মনে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শ্যামল পুরকায়স্থের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।



ওয়াইএফ/০১

সিলেট প্রতিক্ষণ