ছয় দফা দাবিতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘট চলছে সিলেটে। অধিকাংশ যাত্রী অটেরিকশায় করে যাতায়াত করেন বলেন এ ধর্মঘটে তারা বিপাকে পড়েছেন। উপায় না দেখে বেশিরভাগ মানুষেই পায়ে হেঁটে ছুটেছেন গন্তব্যে। ফলে সিএনজি অটোরিকশাবিহীন নগরের ফুটপাত অনেকটাই দখলে ছিল পথচারীদের।
আজ সোমবার (২১ ডিসেম্বর) ভোর থেকে নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় কর্মক্ষেত্রে মানুষ ছুটেছেন পায়ে হেঁটে। আগে থেকে ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়ায় কর্মস্থলগামী অনেকে রিকশা বা লেগুনার অপেক্ষা না করে অফিস সময়ের খানিক আগে বেরিয়ে হেঁটেই গন্তব্যে রওয়ানা দেন। একাধিক পথচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লেগুনাতে অধিক যাত্রী থাকায় স্বাস্থ্যবিধির কথা চিন্তা করে তারা হেঁটেই রওয়ানা দিয়েছেন। অনেকের অভিযোগ করে বলেন, ‘অটোরিকশা ধর্মঘটের সুযোগে রিকশা চালকরা ভাড়া দ্বিগুণ হাঁকছে।
ব্যস্ততম প্রায় সব সড়ক সাধারণত সিএনজিচালিত অটোরিকশার দখলে থাকে। হঠাৎ করে এ বাহন না থাকায় ব্যস্ত নগর যেন ভিন্ন রূপে ধরা দেয় নগরবাসীর সামনে। দুই পাশজুড়ে পথচারীদের চলাচল থাকলেও সড়কপথ অনেকটাই ফাঁকা।
নগরের বিভিন্ন মোড় ঘুরে দেখা যায়, লেগুনাতে যাত্রীসংখ্যা তুলনামূলক বেশি। বিশেষ করে নগরের সোবহানীঘাট এলাকা থেকে টিলাগড় সড়কে ছিল লেগুনার আধিক্য। লেগুনা চালক আলতাফ হোসেন দেশদর্পণকে বলেন, ‘অন্যান্য সময়ে বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করলেও আজ খুব কম সময়েই সিটগুলো যাত্রীতে ভরে যাচ্ছে।’ লেগুনা ভাড়া না বাড়ানোর কারণে এমনটি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
কেন ভাড়া বেশি হাঁকছেন এমন প্রশ্নে রিকশা চালক রহিম উদ্দিন বলেন, ‘যাত্রী বেশি। সবাই রিকশায় উঠে পড়তে চায়। চাহিদা থাকায় আমরা ভাড়া সামান্য বেশি চাইছি।’ সাধারণ দিনের তুলনায় আজ রোজগার বেশি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি যেতে রাস্তায় নেমেছিলেন মাসুক আহমদ। নগরের টিলাগড় পয়েন্টে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বাসের দেখা পাননি। লেগুনাতে যাত্রীর গাদাগাদি আর রিকশাচালকের অতিরিক্ত ভাড়ার আবদারের কারণে তিনি বাসের অপেক্ষা করছেন বলে জানান। তবে অনেক যাত্রীকে পাঠাও এর মতো মোটরসাইকেল রাইডারদের সহায়তা নিতেও দেখা গেছে।
চলাচলে ভোগান্তি হলেও অনেকে সিএনজি অটোরিকশার না থাকায় স্বস্তির কথাও জানিয়েছেন। নগরের চৌকিদেখি এলাকার বাসিন্দা পাভেল ধর বললেন, ‘অতিরিক্ত সিএনজি অটোরিকশার কারণে নগরের সব সড়কই ভরে থাকে। আজকে ধর্মঘট থাকায় রাস্তায় হাঁটাচলা করতে, মোটরসাইকেল বা গাড়ি চালাতেও ভালো লাগছে। তাছাড়া নগরকে কেমন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন লাগছে আমার কাছে।’ একইভাবে অনেকে স্বস্তির কথা জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
প্রসঙ্গত, গ্রিল সংযোজনের পুলিশের নির্দেশ বাতিল, প্রাইভেট গাড়ি দ্বারা যাত্রী পরিবহন বন্ধসহ ৬ দফা দাবিতে সিলেট জেলা সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন ও সিলেট জেলা অটোরিকশা-অটোটেম্পু শ্রমিক জোট’র সমন্বয়ে গঠিত ঐক্য পরিষদের ডাকে আজ সকাল ৬টা থেকে সিলেটে ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
স্বত্ব © ২০১৪ দেশ দর্পন